প্রোব নিউজ, ঢাকা: সরকার সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে পেরেছে বলেই আজ দেশ শান্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার গভীর চক্রান্ত চলছে। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০১৪’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, যে যার কর্মস্থলে তার নিজের কাজ করবেন। সেটা সামরিক বা বেসামরিক হোক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা বা ব্যবসায়ী হোক। প্রত্যেকে তার কর্মক্ষেত্রে একটা সুষ্ঠু পরিবেশ চায়। আমরা কর্মক্ষেত্রে একটি সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি। যাকে বলে জব স্যাটিসফেকশন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আর হানাহানি, জঙ্গিবাদ চাই না। আমরা বাংলাদেশকে সেভাবে গড়তে চাই, যেখানে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, হানাহানি থাকবে না। বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়া ও বিশ্বের একটি উন্নত দেশ।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে শান্তি ফিরে এসেছে। আবার আমরা অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে পা রাখতে সক্ষম হয়েছি। এবারই প্রথম বাংলাদেশে একটি সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়েছে।
সবাইকে লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীকাল ২৬ মার্চ প্যারেড স্কয়ারে লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া হবে। সকলকে আমন্ত্রণ জানাই। যাঁরা দূরে আছেন, তাঁরা নিজ নিজ জায়গা থেকে একাত্ম হবেন। আমরা এ দেশটা সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনৈতিক, সাংসদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসাইন ভূইঞা।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার অপতৎপরতায় লিপ্ত দেশী-বিদেশী চিহ্নিত মহল। সব ষড়যন্ত্র চক্রান্ত প্রতিহত করে দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষা এবং গণতন্ত্রের পতাকাকে সমুন্নত রাখতে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়া বিবৃতিতে বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে এক গৌরবোজ্জ্বল সোনালী দিন। এ দিনে বিশ্ব মানচিত্রে দেশমাতৃকার স্বাধীন সত্তা ফুটে উঠেছিল। আজকের এই দিনে আমি দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশীসহ সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এ মহান দিনে আমি শ্রদ্ধা জানাই স্বাধীনতা-যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি। যাদের আত্মত্যাগে আমরা অর্জন করেছি স্বজাতির মুক্তি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানসহ সব জাতীয় নেতার স্মৃতির প্রতি আমি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। স্মরণ করি সে সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা, যাদের নয় মাস জীবন মরণ লড়াইয়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সে সব মা-বোনদের কথা, যারা মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২৬ মার্চ আমাদের এমন এক মহিমান্বিত দিন, যেদিন হাজার বছরের সংগ্রাম আর যুদ্ধের রক্তস্নাত পথে স্বদেশের স্বাধীনসত্তা বিশ্ব মানচিত্র নির্ণিত হয়। এ দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। সেদিন জাতীয় নেতৃত্বের অনুপস্থিতিতে তার ঘোষণায় দিশেহারা জাতি পেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার অভয়মন্ত্র। ফলে দীর্ঘ নয় মাস ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্জনে সক্ষম হই।
খালেদা জিয়া বলেন, “একটি শোষণ, বঞ্চনাহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এদেশের মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। নানা কারণে আমরা সে লক্ষ্যে অর্জনে সক্ষম হইনি। বার বার ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী শক্তি আমদের সে লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি। দেশী-বিদেশী চক্রান্তের ফলে আমদের গণতান্ত্রিক পথচলা বার বার হোঁচট খেয়েছে। বিঘিœত হয়েছে আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রচেষ্টা। দুর্বল করা হয়েছে আমাদের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বকে।”
তিনি বলেন, সব ষড়যন্ত্র চক্রান্ত প্রতিহত করে মাতৃভূমির স্বাধীনতা সুরক্ষা এবং গণতন্ত্রের পতাকাকে সমুন্নত রাখতে আমাদের সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য।
প্রোব/মুআ/জাতীয় ২৫.০৩.১৪