প্রোবনিউজ, ঢাকা: গর্ভধারিণী মা তার দুই ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছেন সাড়ে ছয় হাজার টাকায়। এরপর তিনি সংসার ছেড়েও চলে যান। এ ঘটনা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার দিঘলধী গ্রামের।
মা মুক্তা বেগমের ভাষ্য, স্বামী বয়সে অনেক বড় হওয়ায় নানাজনের নানা কথায় মনটা বিষিয়ে ওঠে। বেকার স্বামীর সংসারে দুই ছেলেকে ভালোভাবে মানুষ করা নিয়েও শঙ্কা ছিল। এ জন্য সন্তান দুটিকে বিক্রি করে দেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার দিঘলধী গ্রামের রফিকুল ইসলাম প্রধানীয়ার সঙ্গে সাত বছর আগে সদর উপজেলার মৈশাদী গ্রামের মুক্তা বেগমের বিয়ে হয়। তাঁদের দুই সন্তান মাহিদ (ছয়) ও নাহিদ (দুই) রফিকুলের বয়স বর্তমানে ৫২ বছর, মুক্তার বয়স ২৫ বছর। একসময় রফিকুল ঢাকায় রিকশা চালাতেন, বর্তমানে তিনি বেকার। স্বামী-স্ত্রীর বয়স নিয়ে নানাজনের নানা কটু কথার জেরে তাদের দাম্পত্য জীবনে বিরোধ চলছিল।
রফিকুল ইসলাম প্রধানীয়ার দাবি, ছয় মাস আগে তাঁর অজান্তে দুই সন্তানকে বিক্রি করে স্ত্রী চলে যান। বহু খোঁজাখুঁজির পর তিনি দুই সন্তানের সন্ধান পান। তাঁর দাবি, স্ত্রী বড় সন্তান মাহিদকে কচুয়া উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের বিল্লাল মিয়ার স্ত্রীর কাছে চার হাজার টাকা এবং ছোট ছেলে নাহিদকে হাজীগঞ্জ উপজেলার ফুলছোঁয়া গ্রামের সেলিমের স্ত্রী রিনা আক্তারের কাছে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এ তথ্য জানিয়ে তিনি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেন।
হাজীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মান্নান বলেন, রফিকুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে স্ত্রী মুক্তা বেগমকে জেলার সদর উপজেলার মৈশাদী থেকে আটক করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রীকে নিয়ে শিশু নাহিদকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটিকে তার বাবার কোলে তুলে দেওয়া হয়েছে। মাহিদকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
আটক হওয়ার পর মা মুক্তা বেগম বলেন, ‘শিশুদের বিক্রি করে ঢাকায় চলে যাই। সেখানে গিয়ে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করি। বয়স বেশি স্বামীকে নিয়ে সংসার করা ও দুই সন্তানকে ভবিষ্যতে মানুষ করতে না পারার ভয়ে বিক্রি করে দিই।’
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মা মুক্তা বেগমের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি।
চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার আমির জাফর জানান, বড় শিশু মাহিদকেও শিগগিরই উদ্ধার করা হবে।
প্রোব/পার/জাতীয়/২০.০৩.২০১৪
২০ মার্চ ২০১৪