ছাত্র বাড়ছে কিন্তু কমছে শিক্ষার মান
প্রোব নিউজ, ঢাকা:বিশ্ব ব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ভর্তির হার বেড়েছে। উভয় স্তরে এসেছে লিঙ্গ সমতা। কিন্তু অগ্রগতি নেই শিক্ষার মানে। শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রাক-প্রাথমিকে জোড় দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশের অন্যতম এই উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি।
বিশ্ব ব্যাংক প্রকাশিত ‘সীডিং ফার্টাইল গ্রাউন্ড: এডুকেশন দ্যাট ওয়ার্কস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন সব মন্তব্য করা হয়েছে।
এদিকে বিশ্ব ব্যাংকের এ মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এমনকি তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার মান উন্নয়নকে শিক্ষা ব্যবস্থার মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। শিক্ষার মান উন্নয়নে পিছিয়ে থাকার কারণ হিসেবে অবকাঠামোগত দুর্বলতা, শিক্ষকের প্রশিক্ষণের অভাব এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকাকে দায়ী করছেন মন্ত্রী। পাশাপাাশি রাজনৈতিক অনৈক্যকেও দায়ী করেন তিনি।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সবার জন্যে শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে সফল হয়েছে। বিশেষ করে ২০১০ সালে প্রাথমিকে সামগ্রীক ভর্তির হার ১০১ শতাংশে পৌঁছেছে। যা ২০০০ সালে ৬৩ শতাংশ ছিল। পাশাপাশি মাধ্যমিকেও ২০১০ সালে ভর্তির হার ৯২ শতাংশে এসে ঠেকেছে। কিন্তু ২০০০ সালে তা ছিল মাত্র ৫২ শতাংশ। পাশাপাশি এসময়ে মধ্যে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর সম্পন্নের হার বৃদ্ধিরও তথ্য দিয়েছে বিশ্ব
ব্যাংক।
তবে শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিশ্ব ব্যাংক। শিক্ষার্থীদের ওপর পরিচালিত এক মূল্যায়ন জরিপের তথ্য উল্লেখ করে এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পঞ্চম শ্রেণীর মাত্র ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর দক্ষতা রয়েছে বাংলা বিষয়ে এবং ৩৩ শতাংশের দক্ষতা রয়েছে গনিতে। প্রায় একই চিত্র অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে। দেশের মধ্যে এলাকা ভেদে এর তারতম্য আরো বেশি। বিশেষ করে ঢাকা ও চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা জাতীয় গড় মানের তুলনায় এগিয়ে থাকলেও রাজশাহী ও সিলেট এলাকার শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে রয়েছে।
তাই শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রাক-প্রাথমিকের ওপর জোর দেয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্যে এবং শহরের বস্তিবাসি শিশুদের জন্যে নীতি পরিকল্পণা গ্রহনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। শিক্ষকদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ উপবৃত্তি প্রদান কার্যক্রম জোরদারেরও পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের প্রধান রাশেদা কে চৌধুরী প্রোব নিউজকে জানান, বাংলাদেশে শিক্ষায় সরকারি বিনিয়োগ এশিয়ায় সর্বনিম্ন আর পাশাপাশি চলছে ব্যয়বহুল বেসরকারি শিক্ষা। ফলে শিক্ষার বৈষম্য বেড়েছে, কমেছে শিক্ষার মান।
প্রোব/শর/জাতীয়/ ৭ মার্চ ২০১৪