প্রোব নিউজ, ডেস্ক: আফগানিস্তানের যুদ্ধ আফগানদের স্বার্থে ছিলো না। বরং মার্কিন স্বার্থ চরিতার্থ করতেই আফগানিস্তানে যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনই মন্তব্য করলেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই।
সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চরম রাগ প্রকাশ করে কারজাই বলেন, এমন এক যুদ্ধে আফগানরা প্রাণ হারিয়েছে যে যুদ্ধ তাদের জন্য ছিলোই না। ২০০১ সালের পহেলা সেপ্টেম্বরের পর মার্কিন ইতিহাসে একযুগ ধরে পরিচালিত সবচে দীর্ঘ যুদ্ধ হয় আফগানিস্তানে। আর এই যুদ্ধ পুরোপুরিই ছিলো মার্কিন সুরক্ষা ও পশ্চিমা স্বার্থান্বেষী। আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র একমাস আগে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে এমন মন্তব্য করলেন কারজাই।
এদিকে এরআগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরে অসম্মতির কথা জানান কারজাই। এবছরের পরেও আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা অবস্থানের বৈধতা নিশ্চিত করাই মূলত ওই চুক্তির লক্ষ্য। কারজাইয়ের এই সিদ্ধান্তে তার ওপর অনেকটাই অসন্তুষ্ট হোয়াইট হাউস ও বারাক ওবামা। ওই সিদ্ধান্তের পর এবছরের শেষ নাগাদ আফগানিস্তানে কোন মার্কিন সেনা না থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন ওবামা। আর এই নির্দেশের কথা কারজাইকে টেলিফোনে জানান তিনি। গেলো জুনের পর থেকে কারজাইয়ের সঙ্গে ওবামার এটাই ছিলো প্রথম আলাপ।
তবে আরেক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানায়, এবছরের শেষ নাগাদ উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তি সই হতে পারে। এবিষয়ে কারজাই ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, তার উত্তরসূরীর সঙ্গে চুক্তি সই হতে পারে। তবে তার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই তালেবানদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। আর আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষের ঘরবাড়িতে মার্কিন হামলা বন্ধ করতে হবে।
বর্তমানে ন্যাটোর নেতৃত্বে ৫২ হাজারেরও বেশি সেনা রয়েছে আফগানিস্তানে। যার মধ্যে সাড়ে ৩৩ হাজার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য। আর এপর্যন্ত যৌথবাহিনীর প্রায় সাড়ে তিন হাজার এবং আড়াই হাজার মার্কিন সেনা আফগানিস্তানে তালেবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিহত হয়েছে। সম্প্রতি আফগানিস্তানের নিজস্ব সেনা ও পুলিশ বাহিনী তালেবানদের নিয়ন্ত্রণ করতে সমর্থ হলেও দুর্গম এলাকাগুলোতে তারা তালেবানদের মোকাবেলা করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
সাক্ষাৎকার শেষে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিককে কারজাই বলেন, “মার্কিন জনগণের জন্য রইলো আমার শুভকামনা আর কৃতজ্ঞতা। আর মার্কিন সরকারকে উষ্ণা ছাড়া দেবার মতো আমার আর কিছুই নেই।”
প্রোব নিউজ/মম/আন্তর্জাতিক/০৩.০৩.২০১৪