প্রোবনিউজ, সিলেট: যৌন হয়রানির ঘটনায় আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগীয় প্রধান আনোয়ারা বেগম। এক সপ্তাহ আগে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিলেও বৃহস্পতিবার তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে প্রশাসন।
তবে পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে আনোয়ারা বেগম জানান, নোংরা রাজনীতির শিকার ও অপরাজনীতি পছন্দ করেন না বলেই তিনি পদত্যাগ করেছেন।
এদিকে সভাপতি পদত্যাগ করলেও লোকপ্রশাসন বিভাগের সমস্যা আরা প্রকট হয়েছে। ওই বিভাগের দায়িত্ব নিতে চাচ্ছেন না কেউ। বর্তমানে লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রধান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহিমকে। তবে তিনিও বিভাগের ওই পদের দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সিনিয়র শিক্ষক জানান, বাইরের কোথাও থেকে একজন সিনিয়র অধ্যাপক এনে তাকে ওই বিভাগের দায়িত্ব দেয়ার চিন্তা করছে প্রশাসন।
ইতিমধ্যে এই বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। তবে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনসহ বিভাগের সার্বিক বিষয় নিয়ে আগামী ২২ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সিন্ডিকেটের ওই সভায় যদি যৌন হয়রানির ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের তিনদফা দাবি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া না হয়, তাহলে পরদিন থেকে ক্যাম্পাসে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট দেয়া হবে।
জানা গেছে, লোক প্রশাসন বিভাগের কর্মচারী আবু সালেহর বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে বিভাগীয় সভায় শিক্ষক নাছির উদ্দিন ওই ছাত্রী সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। উভয় ঘটনাতে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে আনোয়ারা বেগমের নীরব ভূমিকার কারণে তার বিরুদ্ধেও ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। তারা ওই ঘটনায় বিভাগীয় প্রধানের প্রতি অবহেলার অভিযোগ এনে তার অব্যাহতি, কটুক্তিকারী শিক্ষক নাছির উদ্দিনের বিচার এবং মূল অভিযুক্ত কর্মচারী আবু সালেহকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দাবিতে গত দুই সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে আসছেন।
তবে নিজেকে ওই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তার কথা অস্বীকার করেছেন শিক্ষক নাছির উদ্দিন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন,“বিভাগীয় ওই সভায় উপস্থিত না থাকলেও কথিত কটুক্তির অভিযোগ এনে কিছু মহল পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদেরকে উস্কে দিয়েছে।” এ ব্যাপারে বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি নোটিশ বিভাগে টানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
শাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল হক ভূঁইয়া বলেন, “তদন্তের প্রতিবেদন আমাদের কাছে এসেছে। সিন্ডিকেটে সভার আলোকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। সে পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরে থাকতে হবে।”
প্রোব/খোআ/জা্তীয়/১৮.০৪.২০১৪