মিয়ানমারের নির্বাচনে নিষিদ্ধ মুসলমান এমপি
প্রোবনিউজ, ডেস্ক: মিয়ানমারের পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দেশটির একজন রোহিঙ্গা মুসলমান এমপিকে। ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না এ বর্তমান পার্লামেন্ট সদস্য। যদিও মিয়ানমারে শুরু হওয়া রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্য একটি টেস্ট কেস হিসেবে দেখা দেখা হচ্ছে এ নির্বাচনকে।
ক্ষমতাসীন ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (ইউএসডিপি) এমপি শোয়ে মং কে তার নির্বাচনী এলাকা রাখাইন রাজ্য থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হিসেবে বলা হয়েছে, তার বাব-মা মিয়ানমারের নাগরিক ছিলেন না। এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ২০১০ সালের নির্বাচনে এ অঞ্চল থেকেই এমপি নির্বাচিত হওয়া এ নেতা।
মিয়ানমার টাইমসকে শোয়ে মং বলেন, ‘আমার বাবা-মা উভয়েই ১৯৫৭ সালে জাতীয় নিবন্ধন কার্ড সংগ্রহ করেছেন। সে সময়ই ওটাই ছিল একমাত্র গ্রহণযোগ্য পরিচয়পত্র। আমাদের নাগরিকত্বের বিষয়টি পুরোপুরি স্পষ্ট’।
তিনি এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলেও জানিয়েছেন। দল তার নির্বাচন করার আবেদন প্রত্যাখ্যান করার পর তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শোয়ে মং জানিয়েছেন তার বাবা মিয়ানমারের একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের পার্লামেন্ট সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি মানবাধিকার সংগঠন গত সোমবার এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ান ফর হিউম্যান রাইটসের চেয়ারপারসন ও মালয়েশিয়ার এমপি চার্লস সান্তিয়াগো বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দাবি হাস্যকর এবং এ সিদ্ধান্তের ফলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। ভোটের মতোই নির্বাচনে লড়া একটি মৌলিক অধিকার, কোনো জাতিগত বা ধর্মীয় কারণে তা বাতিল করা যায় না’।
কয়েক দশক ধরেই মিয়ানমারে প্রায় দশ লাখ সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা বিভিন্নভাবে নিপীড়নের সম্মুখীন হচ্ছে। তবে এ প্রথম সরকার তাদের নির্বাচনের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বছরের শুরুতে কয়েক লাখ রোহিঙ্গার কাছ থেকে ‘হোয়াইট কার্ড’ নামে পরিচিত নাগরিকত্ব সনদ কেড়ে নেয় সরকার।
মিয়ানমারের সংখ্যাগুরু রাখাইন বৌদ্ধদের থেকে ভাষা ও জাতিগতভাবে স্বতন্ত্র রাখাইন সম্প্রদায়কে সরকারিভাবে পাশের বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য করা হয়। মিয়ানমারে তাদের ‘বাঙালি’ নামে অভিহিত করা হয়।
২০১০ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে অনেক রোহিঙ্গাই সামরিক বাহিনী সমর্থিত ইউএসপি দলকে ভোট দিয়েছে।
বৌদ্ধদের নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা ও অন্যান্য মুসলমান তাদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ হয়েছে, শত শত লোককে খুন করা হয়েছে।
প্রোব/পি/আন্তর্জাতিক/২৬.০৮.২০১৫